মোঃ জসিম উদ্দিন;স্টাফ রিপোর্টারঃ
মুমিনের প্রতিটি কাজই ইবাদত। ঘুমও এর ব্যতিক্রম নয়। যদি কোনো ব্যক্তি ইসলামের নির্দেশিত পদ্ধতিতে ঘুমায়, তার ঘুমও ইবাদতে পরিণত হয়। রাতে ঘুমানোর আগে কিছু করণীয়-বর্জনীয় কাজ রয়েছে। নিচে সেগুলো তুলে ধরা হলো:-
মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে বলেন, তোমাদের নিদ্রাকে করেছি ক্লান্তি দূরকারী (আন-নাবা ৯)।
নিদ্রা মানুষের চিন্তা-ভাবনাকে দূর করে তার অন্তর ও মস্তিষ্ককে এমন স্বস্তি ও শান্তি দান করে যার বিকল্প দুনিয়ার কোন শান্তি হতে পারে না। নিদ্রা বা ঘুম মানব জাতীর জন্য আল্লাহর বড় নেয়ামত।
রাতে দেরি করে না ঘুমানো-
রাসুল (সা.) এশার নামাজের পর গল্পগুজব ও গভীর রাত পর্যন্ত সময় নষ্ট না করে তাড়াতাড়ি ঘুমানোর তাগিদ দিতেন। (মুসনাদে আবি ইয়ালা, হাদিস : ৪৮৭৯)
তাই রাতের বেলা কোনো অহেতুক কাজ, ইন্টারনেট ব্রাউজিং, কোনো বিনোদন উপভোগে সময় নষ্ট না করে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়া উচিত।
শোয়ার সময় বিছানাটা ঝেড়ে নেওয়ার জন্য নবী করীম (সাঃ) বলেছেন।
বারা ইবনু আযেব (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) শোয়ার সময় ডান পার্শ্বের উপর শুতেন, অতঃপর বলতেন,
“আল্লা-হুম্মা আসলাম্তু নাফ্সী ইলাইকা ওয়া ওয়াজ্জাহ্তু ওয়াজহী ইলাইকা ওয়া ফাউওয়ায্তু আমরী ইলাইকা ওয়ালজাতু যাহরী ইলাইকা রাগবাতাওঁ ওয়া রাহবাতান ইলাইকা লা মালজাআ ওয়ালা মানজাআ মিনকা ইল্লা ইলাইকা আ-মানতু বিকিতা-বিকাল্লাযী আনঝালতা ওয়া বি নাবিইয়্যিকাল্লাযী আরসালতা”।
অর্থ: হে আল্লাহ! আমি নিজেকে তোমাতে সমর্পণ করলাম, তোমার দিকে মুখ ফিরালাম, আমার কাজ তোমার প্রতি ন্যস্ত করলাম এবং তোমার প্রতি ভয় ও আগ্রহ নিয়ে তোমার আশ্রয় গ্রহণ করলাম। তুমি ছাড়া কোন আশ্রয়স্থল ও নাজাতের স্থান নেই। তোমার নাযিলকৃত কিতাবের প্রতি ঈমান আনলাম এবং তোমার প্রেরিত নবীর প্রতি ঈমান আনলাম।
ফযীলত : নবী করীম (সাঃ) এক ব্যক্তিকে বললেন, হে অমুক, যখন তুমি বিছানায় ঘুমাতে যাবে তখন ওযূ করবে তোমার ছালাতের ওযূর ন্যায়। অতঃপর তোমার ডান পার্শ্বের উপরে শুবে এবং উক্ত দোয়া বলবে। তারপর নবী করীম (সাঃ) বললেন, যদি তুমি সেই রাতেই মৃত্যু বরণ কর, তবে তুমি ইসলামের উপর মৃত্যু বরণ করবে আর যদি তুমি ভোরে উঠ, তবে তুমি কল্যাণের সাথে উঠবে।
নবী করীম (সাঃ) যখন রাতে শয্যা গ্রহণ করতেন, তখন বলতেন,
“আল্লা-হুম্মা বিসমিকা আমূতু ওয়া আহইয়া”।
অর্থ: হে আল্লাহ! তোমারই নামে আমি মৃত্যুবরণ করছি এবং তোমারই দয়ায় পুনরায় জীবিত হব।
রাতে ঘুমাবার সময় আয়াতুল কুরসী পাঠ করলে তার জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে ঘুম থেকে উঠা পর্যন্ত একজন পাহারাদার নিযুক্ত করা হয়। ফলে শয়তান তার নিকট আসতে পারে না।
নবী করীম (সাঃ) রাতে ঘুমাবার সময় সূরা ইখলাছ, সূরা ফালাক্ব, সূরা নাস পড়তেন।
রাসূল (সাঃ) শোয়ার সময় গালের নিচে ডান হাত রেখে নিম্নের দোয়াটিও পড়তেন-
” আল্লা-হুম্মা ক্বিনী আযা-বাকা ইয়াওমা তাবআছু ইবা-দাকা”।
অর্থ: হে আল্লাহ! তুমি আমাকে তোমার আযাব হতে রক্ষা কর, যেদিন তুমি তোমার বান্দাদেরকে কবর হতে উঠাবে।
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি রাতে সূরা বাক্বারার শেষ দুটি আয়াত পড়বে, তার জন্য তা যথেষ্ট হবে।
নবী করীম (সাঃ) শোয়ার সময় ফাতেমা (রাঃ)-কে ৩৩ বার সুব্হা-নাল্লাহ, ৩৩ বার আল্-হাম্দুলিল্লাহ, ৩৪ বার আল্লাহু আকবার পড়তে বলেছিলেন।
আমাদের সকলকে এর উপর আমল করার তাওফিক দান করুন।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।